সীমান্তের ওপারে চাপা উত্তেজনা। পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Attack) পর থেকেই পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে। আর এই প্রেক্ষিতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ও জরুরি পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত থাকতে এবার দেশের একাধিক রাজ্যে যুদ্ধকালীন মহড়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দিনক্ষণ ঠিক ৭ মে, বুধবার।
এই মহড়া কোনও রুটিন বিষয় নয়। বরং কেন্দ্রের তরফে রাজস্থান, গুজরাত, পঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীরের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে শুধু সীমান্তে নয়, দেশের মোট ২৪৪টি জেলায় এই মহড়া চালানো হবে বলে খবর। লক্ষ্য – শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাতেও সাধারণ মানুষ যেন বুঝতে পারেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কীভাবে নিরাপদে থাকা যায়।
কী কী করা হবে এই মহড়ায়?
সরকারি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, মহড়ায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হবে-
- বিমান হানার সতর্কবার্তা সাইরেন চালু করা
- ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতিতে নাগরিকদের করণীয় (যেমন আলো নিভিয়ে রাখা)
- স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের ভূমিকা (সচেতনতা, নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া)
- দ্রুত উদ্ধারকার্য চালানো ও নির্দেশ মেনে চলা
এই মহড়ায় অংশ নেবেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা, হোমগার্ড, নাগরিক সুরক্ষা কর্মীরা, এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্রের সদস্য এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ইতিমধ্যেই শুরু ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’
রবিবার রাতে পঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সেনার তরফে এক অভিনব ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়, রাত ৯টা। সব আলো নিভিয়ে এলাকার মানুষকে অনুশীলন করানো হয় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য। স্থানীয়দের আগেই জানানো হয়েছিল যাতে কোনও উজ্জ্বল আলো বা চোখে পড়ার মতো জিনিস ব্যবহার না করেন ওই সময়। এটা সেই চিরচেনা সামরিক কৌশল, যেখানে রাতের অন্ধকারে শত্রুর বিমানকে বিভ্রান্ত করা হয়।
পহেলগাঁও হামলার জবাবে কী বললেন মোদী-রাজনাথ?
এই মহড়া শুধুই প্রস্তুতি নয়, এটা জবাব দেওয়ার একটা বার্তাও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন,
- “যারা বন্দুকের ট্রিগার চেপেছিল এবং যারা ষড়যন্ত্রে শামিল ছিল – কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
- পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ রবিবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন –
- “আপনারা প্রধানমন্ত্রীকে জানেন, ওঁর দৃঢ়তা সবাই জানে। ভারত উপযুক্ত জবাব দেবে।”
আরও পড়ুন: ট্রেন যাত্রার সময় সমস্যা? রেলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানালেই মিলবে দ্রুত সমাধান
তিনি আরও বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব সেনার সঙ্গে মিলে সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখা এবং শত্রুকে যোগ্য জবাব দেওয়া।
ভারতের সীমান্তে আজ অশান্তির ছায়া। তার মাঝে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয় – এটা বাস্তব সম্ভাবনার দিকে এগোনো এক পদক্ষেপ। আর সেই প্রস্তুতির কেন্দ্রে এবার সাধারণ মানুষ। কারণ যুদ্ধ শুধু সামরিক বাহিনীর লড়াই নয়, জনগণের সচেতনতাও তার বড় অস্ত্র।