ইংল্যান্ড সফরের আগে ভারতীয় ক্রিকেট শিবিরে যেন ইস্তফার হাওয়া। প্রথমে অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তারপর বিরাট কোহলি। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়ল দলের দীর্ঘদিনের স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ সোহম দেশাইয়ের (Soham Desai)। গৌতম গম্ভীরের হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রাক্কালে এই বিদায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সোহম দেশাই তাঁর পদত্যাগের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই ঘোষণা করেন। আবেগঘন বার্তায় তিনি লেখেন, “দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের সেবা করতে পেরে আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। মাত্র ২৯ বছর বয়সে জাতীয় দলের অংশ হতে পেরেছিলাম — সেটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। রবি শাস্ত্রী ও বিরাট কোহলির ওপর আমার প্রতি আস্থার জন্য কৃতজ্ঞ। রোহিত শর্মার কথাও আলাদা করে স্মরণ করছি, যাঁর নেতৃত্বে কাজ করাটা ছিল অনন্য অভিজ্ঞতা।”
গম্ভীরের আগমনেই কি তাল কাটল?
ভারতীয় দলের নতুন হেড কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীরের নাম শোনা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও, দলীয় পরিকাঠামোতে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে একের পর এক প্রস্থান দেখে। ক্রিকেটমহলের একাংশ মনে করছে, গম্ভীরের সঙ্গে কাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে অমিল থাকায় সরে দাঁড়ালেন সোহম দেশাই।
আবেগে ভাসলেন সিরাজ
সোহম দেশাইয়ের বিদায়ে আবেগে ভাসলেন জাতীয় দলের অন্যতম প্রধান পেসার মহম্মদ সিরাজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “তুমি শুধু একজন কোচ ছিলে না। পথপ্রদর্শক, পরামর্শদাতা এবং বড় ভাইয়ের মতো পাশে ছিলে সবসময়। এখানেই শেষ নয়, আমাদের আবার দেখা হবে।” এই বার্তা থেকেই বোঝা যায়, দেশাইয়ের সঙ্গে দলের ক্রিকেটারদের সম্পর্ক কতটা গভীর ছিল।
দীর্ঘ সময়ের অবদান
সোহম দেশাই ভারতীয় দলে যোগ দেন রবি শাস্ত্রীর কোচিং আমলে। তারপর রাহুল দ্রাবিড়ের অধীনেও কাজ চালিয়ে গেছেন। ভারতের শারীরিক ফিটনেসের মান বাড়ানোয় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারতের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর থেকেই কোচিং স্টাফে পরিবর্তনের গুঞ্জন চলছিল।
আরও পড়ুন: ট্রেন যাত্রার সময় সমস্যা? রেলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানালেই মিলবে দ্রুত সমাধান
ইঙ্গিতবাহী বিদায়
গম্ভীর দায়িত্ব নেওয়ার আগেই দেশের তিন মহাতারকা—রোহিত, কোহলি ও এখন সোহম—পিছিয়ে গেলেন জাতীয় দলের মূলস্রোত থেকে। এই বিদায় শুধুই কাকতালীয়, না কি নতুন গেমপ্ল্যানের সূচনা, তা নিয়েই প্রশ্ন ঘুরছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে।
সোহম দেশাই চলে গেলেন, কিন্তু রেখে গেলেন এক ফিটনেস-নির্ভর সংস্কৃতি, যা ভারতীয় ক্রিকেটকে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল। এখন দেখার, নতুন কোচ গম্ভীরের নেতৃত্বে এই উত্তরাধিকার কতটা রক্ষা পায় — এবং নতুন অধ্যায় কতটা সফল হয়।