নৃশংস অত্যাচার! তরুণীর যৌনাঙ্গে স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে ১৮ বার আঘাত যুবকের

Moradabad Murder: উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে যেন নেমে এল বিভীষিকা। প্রেমে প্রত্যাখ্যানের জেরে এক তরুণীকে ১৮ বার স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে আঘাত করে খুন করল এক যুবক। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর আগে গোপনাঙ্গে আঘাত করে ঘটনার নৃশংসতা আরও ভয়াবহ করে তোলে। অভিযুক্ত রাফি, যিনি নিহত তরুণীর প্রেমপ্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় প্রতিশোধ নিতে এই জঘন্য কাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশের দাবি।

কীভাবে সামনে এল এই ভয়ংকর ঘটনা?

শনিবার সকালবেলায়, সায়রা নামের ২২ বছর বয়সি তরুণী বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন গরুর জন্য খাবার সংগ্রহ করতে। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। শেষমেশ রবিবার সকালে, গ্রামেরই একটি মাঠে সায়রার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

তার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। প্রথমে সন্দেহ হয় যৌন হেনস্তার। তবে পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, বরং ধারালো স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে একের পর এক আঘাত করে তাঁকে খুন করা হয়েছে।

তদন্তে উঠে এল প্রেমঘটিত প্রতিশোধ

পুলিশ তদন্তে নামে। সায়রার মোবাইল ফোনের কললিস্ট ঘেঁটে দেখা যায়, মৃত্যুর আগের দিন বারবার একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে তাঁর ফোনে কল এসেছিল। ওই নম্বরটি রাফি নামে এক যুবকের। যিনি একই গ্রামের বাসিন্দা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

সায়রার মা, সাফিনা, পুলিশকে জানান, রাফি দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর মেয়েকে বিরক্ত করত, প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বারবার চাপ সৃষ্টি করত। কিন্তু সায়রা কখনও রাজি হননি।

জেরায় ভয়ংকর স্বীকারোক্তি

রাফিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হলে সে অপরাধ স্বীকার করে। পুলিশের দাবি, রাফি জানিয়েছে — “আমি ওকে ভালোবাসতাম, কিন্তু ও আমাকে পাত্তা দিত না। সম্প্রতি গ্রামের একজন ব্যক্তির সঙ্গে ওকে দেখেছিলাম, যার সঙ্গে ওর সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করেছিলাম।”

এই সন্দেহ থেকে উন্মত্ত হয়ে ওঠে রাফি। ঘটনার দিন, সে সায়রার পিছু পিছু মাঠে যায়। যখন দেখে কেউ নেই, তখন আচমকা স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে। পুরো ১৮ বার আঘাত করা হয়।

যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা সায়রা যখন প্রাণ ভিক্ষা করে, তখন রাফি আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে — স্ক্রু-ড্রাইভার ঢুকিয়ে দেয় সায়রার গোপনাঙ্গে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় সায়রার।

আরও পড়ুন: Donald Trump: আরও পড়ুন: ট্রেন যাত্রার সময় সমস্যা? রেলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানালেই মিলবে দ্রুত সমাধান

খুনের পর স্বাভাবিক জীবনযাপন!

পুলিশ জানিয়েছে, খুন করার পর রাফি ঠান্ডা মাথায় বাড়ি ফিরে যায়, স্নান করে, রক্তমাখা পোশাক পাল্টে ঘুমিয়ে পড়ে। এই নিষ্ঠুরতা এবং নির্লজ্জতায় স্তম্ভিত তদন্তকারীরা। এই ঘটনা শুধু একটি খুন নয়, এক ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধির প্রতিফলন। যেখানে নারীর ‘না’ কে সম্মান না করে, তাকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার নাম করে কেউ এমন নৃশংসতা ঘটাতে পারে।

রাফিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে খুন, নারীর প্রতি নিষ্ঠুরতা, এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত আচরণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং দ্রুত বিচার ও কঠোরতম শাস্তির দাবি উঠেছে সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে। এই ঘটনাই প্রমাণ করে — প্রেম একতরফা হলে তা ভালোবাসা নয়, বরং বিপজ্জনক এক执কারে পরিণত হয়, যা প্রাণও কেড়ে নিতে পারে।

Leave a Comment