Kedarnath Ropeway Project: উত্তরাখণ্ডের পবিত্র তীর্থস্থান কেদারনাথ (Kedarnath) দর্শন করতে গেলে এবার আর দীর্ঘপথ পাড়ি জমাতে হবে না। মাত্র আধঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন। ভারত সরকারের নতুন উদ্যোগের ফলে এবার দর্শনার্থীদের জন্য পাহাড়ি পথ হবে আরো সহজ ও সরল। কেন্দ্র সরকারের জাতীয় রোপওয়ে (Ropeway) উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে কেদারনাথ পর্যন্ত রোপওয়ে তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা আগামী দিনে ভক্তদের জন্য যাত্রাপথকে আরও স্বস্তিকর করে তুলবে।
কেদারনাথ রোপওয়ে প্রকল্প | Kedarnath Ropeway Project |
সরকারি সূত্রের একটি খবর অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডের সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত 12.9 km দীর্ঘ রোপওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য অনুমোদন করে দিয়েছে এবং এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে 4081 কোটি টাকা।
এই রোপওয়ে তৈরির ফলে দীর্ঘ আট থেকে নয় ঘন্টা দুর্গম পাহাড়ি পথ মাত্র 36 মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। ফলে বিশেষত বয়স্ক তীর্থযাত্রী এবং শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকরী একটি বিকল্প হতে চলেছে।
কীভাবে বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি?
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোপওয়ে তৈরি হবে সরকারি এবং বেসরকারি অংশীদারিত্বের উপর ভিত্তি করে। নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর এটি যৌথভাবে পরিচালনা করা হবে। ফলে এতে শুধুমাত্র ধর্মীয় দর্শনার্থীদেরই সুবিধা পাবে না, পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেও একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।
হাজার হাজার দর্শনার্থী উপকৃত হবেন
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন প্রায় 18 হাজার দর্শনার্থী রোপওয়ে ব্যবহার করে কেদারনাথে যেতে পারবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে যে দীর্ঘ এবং ক্লান্ত ট্রাকিং বা ঘোড়ার পিঠে চড়ে যাতায়াত করতে হয়, সেই কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে তীর্থযাত্রীরা। ফলে কেদারনাথ যাত্রা হবে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং সময় সাশ্রয়ী।
আরও একটি বড় রোপওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন
শুধুমাত্র কেদারনাথ নয়, উত্তরাখণ্ডের গোবিন্দ ঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত 12.8 কিলোমিটার দীর্ঘ আরেকটির রোপওয়ে পরিকল্পনার অনুমোদন করেছে কেন্দ্র সরকার। এই প্রকল্পের জন্য সরকার 2730 কোটি 13 লক্ষ টাকা ব্যয় করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই দুই প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন ব্যবস্থার আরো বিকাশ হবে এই এলাকায় তা বলাই যায়।
যাত্রা খরচ কেমন হবে?
যদিও রোপওয়ে নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন এবং বাজেট সবে ঘোষণা করা হয়েছে, তবে যাত্রীদের কেদারনাথ পর্যন্ত পৌঁছতে এখন কত টাকা খরচ হবে সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনরকম সরকারি তথ্যে প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এটি সাধ্যের মধ্যেই রাখা হবে, যাতে সাধারণ দর্শনার্থীরাও সুযোগ পায়।
আরও পড়ুন: “বাংলাকে বাংলাদেশ বানানো যাবে না”, যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে মমতাকে কড়া হুঁশিয়ারি মদন মিত্রের
পর্যটন এবং তীর্থযাত্রায় নতুন দিগন্ত
এই রোপওয়ে চালু হলে উত্তরাখণ্ডের পর্যটনশিল্পে এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। শুধুমাত্র তীর্থযাত্রী নয়, সাধারণ পর্যটকরাও প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে এবং সহজেই কেদারনাথ যেতে পারবে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিরও লাভ হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে কেদারনাথ ভক্তদের জন্য দারুন একটি উপহার। ভবিষ্যতে তীর্থযাত্রা হবে আরো সহজ আর কেদারনাথ দর্শন করতে দীর্ঘ ক্লান্তিকর পথ হাঁটতে হবে না। আধ ঘন্টার মধ্যেই ভগবান শিবের দর্শন পাওয়া যাবে, যা ভারতীয় তীর্থযাত্রার ইতিহাসে বিপ্লব আনতে চলেছে।